এক নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্থার অভিযোগে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে(পবিপ্রবি) এক শিক্ষককে সকল শিক্ষা ও পরীক্ষা কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে এবং সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়।
১২ ডিসেম্বর(বৃহস্পতিবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো: মামুন অর রশিদ স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশের মাধ্যমে এই তথ্য জানানো হয়। অভিযুক্ত শিক্ষক হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অনুষদের ডিজ্যাস্টার রিস্ক ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ.কে.এম আব্দুল আহাদ বিশ্বাস।
ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অনুষদ এর ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী এক শিক্ষার্থীর দেওয়া মানসিক নিপীড়ন, ব্যক্তিগত আক্রমণ, অপমানজনক আচরণ ও যৌন হেনস্থার অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে আনিত অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ এর ১২(১) এবং পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সাধারণ আচরণ ও শৃঙ্খলা বিধানের ৯(১) মোতাবেক সাময়িকভাবে চাকরি হতে বরখাস্ত করা হয়। একই সাথে তাকে কেনো চাকরি হতে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হবে না সেই মর্মে আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ প্রদান করা হয়।
এছাড়া তার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের হেনস্থা, পরীক্ষায় নাম্বার আটকিয়ে দেওয়া সহ, গ্রেড কম দেওয়া, টানা ৪/৫ ঘন্টা অনলাইন ক্লাস নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ২০১৮-১৯ বর্ষের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে গত ১৮ নভেম্বর এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ রেজিস্ট্রার বরাবর দাখিল করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অনুষদের এ শিক্ষার্থী জানান, “অধ্যাপক ড. আব্দুল আহাদ দীর্ঘদিন যাবত শিক্ষার্থীদের সাথে এক প্রকার ফ্যাসিবাদ চালিয়ে আসছেন। শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে রীতিমত তিনি বুলিং করা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ভাবে হেনস্থা করেন। ভয়ে কেউ এ বিষয়ে কথা বলতে পারে না। আশা করছি প্রশাসন এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেবে।”
উল্লেখ্য যে, এর আগে এসকল অভিযোগের প্রক্ষিতে গত ১১ ডিসেম্বর(বুধবার) রেজিস্ট্রার কর্তৃক স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশের মাধ্যমে অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. আব্দুল আহাদ বিশ্বাসকে ডিজ্যাস্টার রিস্ক ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মামুনুর রশীদ বলেন, “এ বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। প্রাথমিক কিছু অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অধিকতর তদন্তের পরই এ বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।”
এ বিষয়ে হাঁটাচলায় আংশিক অক্ষম, শারীরিক প্রতিবন্ধী, অধ্যাপক ড. এ.কে.এম আব্দুল আহাদ বিশ্বাসের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।