আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে আজ মঙ্গলবার মঙ্গোলিয়া সফরে গেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। গত বছর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর এবারই প্রথম আইসিসির কোনো সদস্য দেশ সফরে গেলেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
সফরকালে পুতিনকে গ্রেপ্তার করতে মঙ্গোলিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আইসিসি, ইউক্রেন, পশ্চিমা কয়েকটি দেশ ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন। এরপরও মঙ্গোলিয়ার রাজধানী উলানবাটোরে পৌঁছালে পুতিনকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়।
ইউক্রেনে ২০২২ সালে যুদ্ধ শুরু করে রাশিয়া। এরপর দেশটি থেকে শিশুদের বেআইনিভাবে রাশিয়ায় সরিয়ে নেওয়া ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের বিরুদ্ধে ২০২৩ সালে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আইসিসি।
এ পরিস্থিতিতে পুতিনের মঙ্গোলিয়া সফর নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছে কিয়েভ। গত সোমবার কিয়েভ জানিয়েছে, যদি বিমানবন্দরে নামার পর মঙ্গোলিয়ার কর্তৃপক্ষ পুতিনকে গ্রেপ্তার না করে তাহলে তাঁর (পুতিনের) ‘যুদ্ধাপরাধের দায়’ মঙ্গোলিয়াকেও নিতে হবে।
আদেশ মানার বিষয়ে সদস্য দেশগুলোর বাধ্যবাধকতার কথা গত সপ্তাহে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে আইসিসি। মঙ্গোলিয়া যেহেতু আইসিসির সদস্য, তাই আদেশ মেনে পুতিনকে গ্রেপ্তারে দেশটির বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে দেশটি যদি এ আদেশ না মানে, সেক্ষেত্রে তেমন কিছু করার নেই।
পূর্ব এশিয়ার দেশ মঙ্গোলিয়া। চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে দেশটির দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। রাশিয়ার সঙ্গে মঙ্গোলিয়ার ঘনিষ্ঠ সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রয়েছে। আর চীনের সঙ্গে রয়েছে কৌশলগত বাণিজ্য সম্পর্ক।
সোভিয়েত আমলে মঙ্গোলিয়া সোভিয়েত ইউনিয়ন ভুক্ত ছিল। তবে সোভিয়েতের পতনের পর থেকে মঙ্গোলিয়া বেইজিং ও মস্কোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে।
গত সপ্তাহে ক্রেমলিন জানিয়েছে, মঙ্গোলিয়া সফরের সময় পুতিনকে গ্রেপ্তার করা, না করা নিয়ে উদ্বেগের কোনো কারণ নেই।
পাঁচ বছরের মধ্যে মঙ্গোলিয়ায় পুতিনের প্রথম সফর উপলক্ষে রাজধানী উলানবাটোরের সেন্ট্রাল চেঙ্গিস খান চত্বরে দুই দেশের পতাকা দিয়ে সাজানো হয়েছে। গতকাল বিকেলে সেখানে ‘যুদ্ধাপরাধী পুতিনকে বের করে দেওয়ার’ দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে।
আজ দুপুরে মঙ্গোলিয়ায় পুতিনের বিরুদ্ধে আরও বড় বিক্ষোভের পরিকল্পনা রয়েছে। যদিও মঙ্গোলিয়া সরকার পুতিনকে গ্রেপ্তারের আহ্বান বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
মন্তব্য