ময়মনসিংহের শিল্পাঞ্চল ভালুকায় ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে জামিরদিয়া এলাকায় দু’পক্ষের মাঝে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় ২০ জন আহত ও ১৪ টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এঘটনার খবর পেয়ে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
সংঘর্ষে আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৫ আগস্টের পর থেকে ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ি শিল্পাঞ্চল এলাকায় শতাধিক কারখানার ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নেন প্রভাবশালী শহিদুল ইসলাম।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে জামিরদিয়া এলাকায় অবস্থিত রাইদাহ কালেকশন নামে একটি পোষাক কারখানার ঝুট জনৈক আব্দুল ওয়াদুদের পক্ষে স্থানীয় সাইফুল ইসলাম একটি ট্রাক লোড করেন। এ সময় শহিদুল ইসলামের নির্দেশে স্থানীয় রাসেল মন্ডল, শাহজাহান, ইকবাল, ইসমাঈল, খাজা, মাসুদ, সোহাগ, সুজন, মান্নান, লিখন, মিন্টুসহ দুই শতাধিক লোক অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে ট্রাকটি ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য হামলা চালায়। এ সময় জিয়া ও সাইফুলের পক্ষের লোকজন তাদেরকে বাঁধা দেয়। এতে উভয় পক্ষের মাঝে সংঘর্ষের সুত্রপাত হয়।
সংঘর্ষে আহত হয়েছেন, মজিবর রহমান (৪৭), শহিদ (৩৮), ফারুক (৩৫), সাকিব (৩০), নাইম (২৪), ইমসাইল (৫৫), সাহিন (৩৮), মোস্তফা (৪৪), নুর ইসলাম (৩৪), সুজন (৩২) ও আনোয়ার (৩০)।
গুরুতর আহত মজিবর, নুর ইসলাম ও সুজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যান্যদের স্থানীয় হাসপাতাল ও ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। খবর পেয়ে ভালুকা ফায়ার সার্ভিসের দু’টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
স্থানীয় কারখানা মালিক হাফিজ উদ্দিন সহ একাধিক সুত্র জানান, শহিদুল ইসলাম ও তার ছেলে মামুন এবং শহিদুলের ভাই আতিক এর নির্দেশে ওই গ্রুপটি গত ১৫ অক্টোবর ও ১১ নভেম্বর দুই দফা হামলা করে ঝুটের ট্রাক ছিনতাই করার চেষ্টা করেছে। হবিরবাড়ি এলাকায় তার দখলে ১শত ৩৫টিও বেশি কারখানা দখলে রয়েছে এবং তার আত্মীয় স্বজন’রা ওই সব কারখানার ঝুট ব্যবসা পরিচালনা করে। ঝুট ব্যবসাকে কেন্দ্র করে এই এলাকায় যেকোন সময় বড় ধরণের ঘটনা ঘটার আশংকা রয়েছে। এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত হবিরবাড়ি ও আশপাশ এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
এঘটনার সাথে জড়িত রাসেল মন্ডল জানান, সংঘর্ষের সময় তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে থাকা বেশ কিছু মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। ঝুট ব্যবসা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই দু’পক্ষের মাঝে দ্বন্দ্ব চলছিলো।
ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইন-চার্জ শামছুল হুদা খান জানান, সংঘর্ষের ঘটনার খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, থানা পুলিশ ও শিল্পপুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এঘটনা সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনিপদক্ষেপ গ্রহন করা হয়েছে ।
মন্তব্য