ভৌগোলিক কারনে জমির উর্বরতা ও গুনাগুনের উপর ভিত্তি করে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার বেশীর ভাগ চাষ যোগ্য জমিতে ভূট্টা চাষের উজ্জল সম্ভাবনা রয়েছে।
ঝিনাইগাতী উপজেলা প্রাকৃতিক ভাবেই ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সীমানা ঘেষা হওয়ায় জেলা সদরের তুলনায় ঝিনাইগাতী উপজেলাটি আনুমানিক ২০-৩০ ফুট উচুতে এ উপজেলার অবস্থান। প্রতি বছর নভেম্বর মাস থেকে জুন মাস পর্যন্ত এই সময়ের মধ্যে পানির স্তর নেমে যায় ৮০-৯০ ফুট নীচে। ফলে এসময়ে কৃষি জমি এমনকি বাসা বাড়িতে ব্যবহারের জন্য প্রয়াজনীয় পানির ব্যাপক হাহাকার দেখা যায়।
স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা ফরহাদ হাসানের সাথে এবিষয় কথা হলে তিনি জানান, ঝিনাইগাতী উপজলায় মাটির ভেদাভেদ এবং সময় মতো পানি সংকটের জন্য বার মাস ভুট্টা চাষের উপযুক্ত বলে মনে করেন। কেননা ভুট্টা চাষে কম পরিমান সেচ লাগে, ভুট্টা চাষ সাড়ে ৩ থেকে ৪ মাস সময়ের মধ্যে মাত্র ৩ বার সেচ দিতে হয়। ৩ ধাপ সেচের মধ্যে চারা গজানা পর, থোর আসার পূর্ব এবং ধানা হওয়ার সময়। ভূট্টা চাষে ফলন বেশী, ভুট্রাতে পুষ্টি বেশী, পরিশ্রম কম, ধানের তুলনায় ভুট্টায় লাভ বেশী এবং ভূট্রার চাহিদাও রয়েছে দেশ-বিদেশে সমান ভাবে।
এছাড়াও একর প্রতি ধান হয় ৭০ থেকে ৮০ মন, কিন্তু ভূট্টা হয় ১২০-১৩০ মণ। ধানের বাজার মূল্যের চেয়ে ভূট্টার মূল্য বেশী।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, উপজেলার প্রতাবনগর, নকশী, ভালুকা রামরকুড়া সহ প্রায় সকল গ্রামে গত বছরের তুলনায় এবার ভুট্টা চাষ হয়েছে বেশী । কৃষি দপ্তরে ভূট্টা চাষ সর্ম্পকে পরামর্শ নিতে আসেন অনেক কৃষক। একজন কৃষক ভূট্টা চাষে সকল পরামর্শ ও সহযাগীতা নিয়ে ২একর ১৪ কাঠা জমিতে ৫৫ হাজার টাকা খরচের বিনিময়ে ২শত ৮০মন ভূট্টা উৎপাদন করতে সক্ষম হন এবং প্রতিমন বাজারে বিক্রি করে খরচ বাদে লাভ পান ১লক্ষ ২০হাজার টাকা।
এছাড়াও ওই ভূট্টা চাষ থেকে সারা বছরর জন্য গো-খাদ্য এবং জ্বানালী পেয়ে যান। মেশিনের মাধ্যম ভূট্টা ছাড়ানোর পর আটি/শাসগুলো স্থানীয় বাজারের চা ব্যবসায়ীরা জ্বালানী হিসেবে তা ক্রয় করেন। গত বছরর আশানুপাত ফলন হওয়ায় এবছরও উপজেলার কৃষকরা জমি ভূট্টা চাষের আওতায় এনেছেন এবং ফলনও হয়েছে ভাল।
এ ব্যাপার কৃষকদের সাথে কথা হলে এ প্রতিনিধিকে জানান, ধানের তুলনায় ভূট্টা চাষে পরিশ্রম কম, লাভ বেশী হওয়ায় ভূট্টা চাষের প্রতি আমরা আগ্রহী বেশী। একজন কৃষক জানান, আমার ভুট্টা ফলনের অবস্থা দেখে এ এলাকার অনেক কৃষক আগামীতে ভুট্টা চাষ করার জন্য পরামর্শ নিচ্ছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফরহাদ হাসান বলেন, ভুট্টা চাষ একটি লাভজনক ফসল, কম পরিশ্রম, কম খরচ বেশী লাভ হয়।
স্থানীয় কৃষি বিভাগ ভুট্টা চাষ আগ্রহী কৃষকদের সার্বিক ভাবে সহযোগীতার আশ্বাস প্রদান করেন। এছাড়া ভুট্টা চাষের জন্য ব্যাংক ঋণেরও সুবিধা আছে বলে তিনি জানান।
মন্তব্য