শেরপুর জেলার সিমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলায় পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে চোরাকারবারি ও চাঁদাবাজরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে । সিমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতীয় নিষিদ্ব অবৈধ মদ,কাপড় প্রসাধনী সহ মালামাল আমদানি করতে চোরকারবারিরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে । সম্প্রতি ঝিনাইগাতী থানা পুলিশ ও র্যাব ভারতীয় অবৈধ প্রচুর পরিমাণে মদের বোতল পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্বার করতে সক্ষম হয়েছেন । গডফাদাররা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে চোরকারবারিরা সিমান্ত এলাকা দিয়ে ঈদকে সামনে রেখে অবৈধ ভারতীয় মালামাল সহ গরু আমদানিতে সক্রিয় হয়ে উঠবে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে । অপরদিকে ঈদক সামনে রেখে চাঁদাবাজরা সক্রিয় ভূমিকা রাখছে। এরা ভূক্তভোগীকে কৌশল অবলম্বন করে সাধারণ মানুষের নিকট মোটা অংকের চাঁদা আদায় করে থাকে । ঝিনাইগাতী ব্রিজপাড় নিবাসী বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার বর্তমান স্ব পরিবারে আমেরিকা প্রবাসী এ.বি.এম সিদ্দিক ৮০/৯০ বছর যাবত বাপ-দাদার আমল থেকে বসত বাড়ি করে স্থায়ীভাবে বসবাস করে আসছেন। এই বসত ভিটাতেই তার পিতা-মাতার কবর রয়েছে । তার কোর্টের রায় ও এলোটের কাগজ আছে বলে জানা গেছে । সম্প্রতি নদীর ওপারে মহিলা সিদ্দিকা মাদ্রসা বন্যায় নদীর গর্ভে যাওয়ার ফলে তার বসত বাড়িতে পুরাতন টিনসেট ঘর ভেঙে মাদ্রাসা স্থানান্তর ও নিজে থাকার জন্যে ২টি রুম করার কাজ শুরু করলে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে খোরশেদ আলম প্রশাসনের ভয়ভীতি দেখিয়ে মোটা অংকের (তিন লাখ টাকা) চাঁদা দাবি করে । তার চাহিদা মতো টাকা না পাওয়ার ফলে প্রশাসনকে একের পর এক মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করছে । তার বিরুদ্ধে ২০১৬ সালে উপজেলা আইন শৃঙ্খলা সভা চাঁদাবাজির রেজুলেশন সহ বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করে এলাবাবাসী । চাঁদাবাজির এক মামলায় তৎকালিন এসআই রফিক চার্জসিটে লেখেন তার কোন একাডেমিক শিক্ষাগত যোগ্যতা নাই সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা আদায় করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে । আরেক মামলায় শেরপুর ডিবি অফিস থেকে তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি সহ অনেক অপর্কম লিখে আদালতে চার্জসিট প্রদান করেন । আইনের মারপ্যাঁচ থেকে বাহির হয়ে আসলেও তার স্বভাব চরিত্র পরিবর্তন হয়নি । তার অত্যাচারে ঝিনাইগাতীবাসী সহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্ধরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে ।
৫ই আগস্টের পর খোরশেদ আলম স্থানীয় বিএনপি সহ ইউনূস সরকারকে নিয়ে চায়ের দোকানে বিষোদগার করে থাকে এবং তার ফেসবুক প্রোফাইলে আপত্তিকর পোস্ট করে থাকে ।
এ ব্যাপারে কাজের দ্বায়িত্বে থাকা ম্যানাজার মন্জু মিয়া জানায় কাজ চলাকালীন অবস্থায় তার নিকট থেকে তিনলাখ টাকা চাঁদা চায় নচেৎ তার শরীরে রক্ত থাকা পর্যন্ত কাজ করতে দিবে না । সরকারী সাইনবোর্ড খোরশেদ আলম নিজেই রাতের বেলায় খুলে বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে আইনের প্যাচে ফেলানোর চেষ্টায় লিপ্ত বলে জানায় ।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, আমি জানার পরে কাজ বন্ধ করা হয়েছে । পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ,বি,এম সিদ্দিকের ছেলে হায়াত মাহমুদ লিটন বলেন, মাদ্রাসা স্থানান্তর সহ নিজের থাকার জন্যে বাসার কাজ শুরু করলে জনৈক্য খোরশেদ আলম আমায় ফোন দিয়ে মোটা অংকের চাঁদা চায়। আমি চাঁদার টাকা দিতে অসম্মতি প্রকাশ করলে আমাকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন । ইতি পূর্বেও আমার জমিজমা নিয়ে আমার পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমাকে অনেক ক্ষতি সাধিত করেছে । আমি প্রবাস থেকে বর্তমান সরকার ও প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি তার বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া সহ সেনা বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি ।
এলাকাবাসীর পক্ষে দুলাল,হুমায়ুন,জাহাঙ্গির রেফাজ উদ্দিন সহ আরো অনেকেই জানান, ঝিনাইগাতী সদরের ৯৫ পার্সেন্ট জায়গা খাশ খতিয়ানে অথচ কারো সমস্যা হয় না । বীর মুক্তিযোদ্ধা এবিএম সিদ্দিক প্রায় ৯০ বছর থেকে অন্যান্য পরিবারের মতো শান্তি প্রিয়ভাবে এখানে বসবাস করে আসছে । তার বাসা ও মাদ্রসার কাজে বাধা প্রদান ও চাঁদা দাবি করা অমানবিক বলে মনে করেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
এবিষয়ে ভূমি অফিসে কর্মরত জামান মিয়া জানায়, আমরা জানার পর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আশপাশের সকল সরকারি ভূমি দখলদারকে নোটিশ প্রদানের কাজ হাতে নেয়া হয়েছে বলে জানান। নাম না বলার শর্তে এক রাজনৈতিক নেতা জানান, তার চাঁদাবাজি বন্ধ করতে এবং মিথ্যা অপবাদ থেকে বিরত থাকার জন্যে দলীয়ভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এই ভাবে কৌশল অবলম্বন করে উপজেলায় চলছে চাঁদাবাজির মহৎসব যেন দেখার কেই নেই ।
মন্তব্য