দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার ব্রাহ্মন্দি ইউনিয়ন পরিষদ’র চেয়ারম্যান মো. লাক মিয়ার অর্ধশত ব্যাংক একাউন্টে সন্ধান পেয়েছে। একাউন্ট গুলোতে ১৪ হাজার ৩৭৬ কোটি ১৮ লাখ ৫২ হাজার ৫০১ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পেয়েছে । এছাড়া আরও ৫৫ কোটি ২৩ লাখ ৫২ হাজার ৯৫১ টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য দুদকের অনুসন্ধানে তথ্য পাওয়া গেছে। এসব অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) একটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, চেয়ারম্যান মো. লাক মিয়ার বিরুদ্ধে ভিজিডি, ভিজিএফ, এলজিএসপি, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, জোরপূর্বক ভূমি দখল ও মাদক ব্যবসা মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।
অপরদিকে, চেয়ারম্যান মো. লাক মিয়ার স্ত্রী মাহমুদা বেগমের নামের ১৪টি ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে ৪৬১ কোটি ১৬ লাখ ৮৬ হাজার ১৪৬ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পেয়েছে দুদক। এছাড়া মাহমুদা বেগমের নামে ১৪ কোটি ৫০ লাখ ২৩ হাজার ১৯৭ টাকার সম্পদের কোনও বৈধ উৎস খুঁজে পায়নি দুদক।
দুদকের এই শীর্ষ কর্মকর্তা আরও জানান, চেয়ারম্যান লাক মিয়ার নামের ২৬৫ দশমিক ৬১ বিঘা জমি আদালতের মাধ্যমে ক্রোক করা হয়েছে, যার দালিলিক মূল্য ৭৫ কোটি ৫২ লাখ ৬০ হাজার ৮০০ টাকা। তার দুটি গাড়িও জব্দ করা হয়েছে। যেগুলোর মূল্য দুই কোটি ৬৯ লাখ টাকা। এছাড়া ব্যাংক হিসাবে জমা থাকা ১৩ লাখ ১৪ হাজার ৩২২ টাকা অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) করা হয়েছে।
১৯৯০-৯১ করবর্ষ থেকে ২০২৩-২০২৪ করবর্ষ পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী দুদকের অনুসন্ধানে চেয়ারম্যান মো. লাক মিয়ার এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। অপরদিকে ২০০৭-২০০৮ করবর্ষ থেকে ২০২৩-২০২৪ করবর্ষ পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী তার স্ত্রী মাহমুদা বেগমের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। লাক মিয়া ও তার স্ত্রী বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ও মানি লন্ডারিং আইনে পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন আরও জানান, আড়াইহাজার উপজেলার ব্রাহ্মন্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. লাক মিয়ার একজন কর্মচারী হচ্ছেন মো. মহসিন মোল্লা। তার মাসিক বেতন ছিল ১২ হাজার টাকা। তার রয়েছে ১৪টি ব্যাংক হিসাব। এসব হিসাবের মাধ্যমে লেনদেন করেছেন ১০ হাজার ৩২২ কোটি ৭৬ লাখ ৫৮ হাজার ৪৬২ টাকা। ১২ হাজার টাকা বেতনের কর্মচারী হলেও তিনি এনআরবি টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড এবং মেসার্স এনআরবি ট্রেডার্সের মালিক। দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসার পর মহসিন মোল্লা ও তার স্ত্রীর নামে নতুন অনুসন্ধান ফাইল খুলে বিস্তারিত অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক।
মন্তব্য