ময়মনসিংহের তারাকান্দার দাদরা গ্রামে সুফিয়া হত্যাকান্ডের ২৪ ঘন্টার মধ্যে পিবিআই ময়মনসিংহ হত্যার রহস্য উদঘাটন করে। হত্যাকান্ডে জড়িত রোহান মিয়াকে গ্রেপ্তার করে। শনিবার মধ্যরাতে ফুলপুরের বেপারি পাড়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই। রোহান তারাকান্দার দাদরা গ্রামের আলাল মিয়ার ছেলে।
পিবিআই ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মোঃ রকিবুল আক্তার জানান,গত ৩ জুলাই সকালে তারাকান্দার দাদরা গ্রামে একটি পরিত্যক্ত বাড়ীর সেপটিক ট্যাংকে অজ্ঞাত মহিলার গলিত মৃতদেহ পাওয়া যায়। সংবাদ পেয়ে থানা পুলিশ, র্যাব ও সিআইডির পাশাপাশি পিবিআই ময়মনসিংহের একটি টিম ঘটনার রহস্য উদঘাটনে ছায়া তদন্ত শুরু করে।
তিনি আরো জানান, পিবিআইয়ের এডিশনাল আইজিপি, মোঃ মোস্তফা কামালের তত্ত্বাবধানে পিবিআই, ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মোঃ রকিবুল আক্তারের সহযোগীতায় তদন্তকারী কর্মকর্তা সালাহ উদ্দিন আহমেদ, পুলিশ পরিদর্শক ও তার টিম তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় নিহতের পরিচয় সনাক্ত করে। নিহতের নাম সুফিয়া খাতুন। তার পিতার নাম কেরামত আলী, সে ফুলপুরের পালগাওয়ের বাসিন্দা। পরিচয় সনাক্তের ২৪ ঘন্টার মধ্যেই হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামীর পরিচয় সনাক্ত করে এবং ফুলপুর বেপারী পাড়া এলাকা থেকে তদন্তে প্রাপ্ত ঘাতক রোহানকে গ্রেপ্তার করে। এছাড়া রোহানের হেফাজত থেকে তার দেখানো ও সনাক্ত মতে সুফিয়ার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
পিবিআই আরো জানায়, সুফিয়া খাতুন গত ২৯ তারিখ ছাগল বিক্রি করতে স্থানীয় তারাকান্দা বাজারে যায় এবং সন্ধা থেকে তাকে খুঁজে না পেয়ে তার ছোট ভাই ইলিয়াস তারাকান্দা থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করেন।
পিবিআই এর তদন্তে প্রকাশ পায় যে, গ্রেফতারকৃত আসামী রোহান তার একজন বন্ধুর কাছ থেকে নিহত সুফিয়ার মোবাইল নম্বরটি নিয়ে প্রেমের অভিনয় করে এবং গত ২৯ জুন সুফিয়া তারাকান্দা বাজারে ছাগল বিক্রি করতে আসলে আসামী রোহান তার সাথে দেখা করে সুফিয়াকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করে। পরে রাত অনুমান ৯ টার দিকে রোহানের এলাকায় জনৈক গেসু মিয়ার পরিত্যক্ত নির্জন বাড়ীতে সুফিয়াকে নিয়ে গিয়ে আসামী রোহান নিহত সুফিয়ার সাথে শারীরিক সম্পর্কে জড়ায়। শারীরিক সম্পর্ক শেষে এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয় এবং তা ঝগড়ায় রূপ নেয়। এ সময় সুফিয়া উত্তেজিত হয়ে রোহানকে চড় মারে।
এ সময় রোহান সুফিয়ার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে। পরে লাশ গোপন করতে মৃতদেহটি পাশের সেপটিক ট্র্যাংকির ভিতরে ফেলে দেয়। অপরদিকে আসামী রোহান সুফিয়ার সাথে থাকা ৪ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোনটি নিয়ে আত্মগোপনে চলে যায়। রোহান আগেও এইরূপ হত্যাকান্ড জনিত মামলার সাথে জড়িত রয়েছে বলে পিবিআইয়ের তদন্তে প্রকাশ পায় বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার রকিবুল আক্তার।
মন্তব্য